গরুর ঘর তৈরির পদ্ধতি

গবাদিপশুর মধ্যে গরু হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । আমদের দেশে গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রাচীনকাল থেকে গরু কৃষি কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অধিকাংশ মানুষই প্রচলিত পদ্ধতিতে গরু পালন করে ফলে খুব বেশি লাভবান হতে পারে না। উন্নত পদ্ধতিতে গরু পালন করলে গারুর বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং রোগ বালাই কম হয় এবং অধিক লাভবান হওয়া যায়।

নিচে গরু ঘর তৈরির উন্নত পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো :

আবাসস্থল নির্মাণমানঃ

১.    প্রতিটি গাভীর জন্য ৫ বর্গমিটার, ষাঁড়ের জন্য ৬ বর্গমিটার ও বাছুরের জন্য ৩ বর্গমিটার জায়গা লাগে।

২.   ঘরের চারদিকে  ৯০ সে. মি. দেয়াল বা বাশের বেড়া দিয়ে ওপরে জালের বেড়া দিতে হবে।

৩.   ঘরের উচ্চতা ৩ মিটার।

৪.   উচুঁ, বন্যামুক্ত, জায়গা নির্বাচন করতে হবে।

৫. ঘরটি দক্ষিণমুখী হলে সহজেই আলো বাতাস প্রবেশ করবে।

৬.  ঘরটি স্যাঁত স্যাঁতে  হওয়া যাবে না।

৭.   অস্থায়ীভাবে ঘর বানালে বাঁশ, খড় টিন দিয়ে তৈরি করতে হবেইর

৮.   ঘর স্থায়ীভাবে করলে ইট, সিমেন্টের দেয়াল করা যেতে পারে। চালা টিন বা কনক্রিটের হতে পারে।

৯.   ঘরের মেঝে পাকা করলে ভালো তবে পিচ্ছিল করা যাবে না।

১০. ঘরের মেঝের মাঝে একটু উঁচু ও চারদিকে ঢালু দিতে হবে। যাতে মলমূত্র দ্রæত এক কোনায় চলে যায়।

১১. নালা করতে হবে ঘরের চারদিকে যাতে মলমূত্র নালা দিয়ে বের হয়ে  যেতে পারে।

১২. ঘরে বেশ কয়েকটি  জানালা রাখতে হবে।

১৩. বৃষ্টি ও শৈত্যপ্রবাহ যাতে ঘরে প্রবেশ না করে সেজন্য ঠাণ্ডার সময় ত্রিপলে রাখতে হবে।

১৪. ঘরের ভিতর খাদ্য ও পানির ্রাখতে হবে অথবা পাত্র রাখতে হবে।

 

 আবাসস্থলের প্রকারভেদ :

প্রধানত দু’রকম। ১. খোলা ঘর পদ্ধতি ও ২. প্রচলিত  ঘর পদ্ধতি।

১. খোলা পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে পশু রাতে, ঝড়, বৃষ্টি ও শৈত্য প্রবাহের সময় ঘরে থাকে। অন্যসময় ঘরের বাইরে থাকে। তবে ঘরের সামনে দেয়াল ঘেরা খোলা জায়গায় রাখতে হয়। এই পদ্ধতি বয়স্ক পশু ও দুধ দিচ্ছে না এমন গাভীর জন্য খোলা ঘর ভালো। ঘরে বাড়ন্ত বাছুর ৫ মিটার, গর্ভবতী গাভী ২৫ বর্গমিটার ও ষাঁড়ের জন্য ৩০ বর্গমিটার জায়গা প্রয়োজন।

২. প্রচলিত ঘর পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে পশুকে দড়ি দিয়ে সীমাবদ্ধ স্থানে বেঁধে পালন করা হয়। একই স্থানে পশু খাওয়ানো, আরাম করা ও গাভীর দোহন করতে হয়। এ পদ্ধতির জন্য জায়গা কম লাগে। একে গোশালা বলে। গোশালা দুই রকমঃ

ক. একসারি বিশিষ্ট গোশালা : অল্প সংখ্যক পশু পালন করা হয়। একটি লম্বা বাঁশের আড়ে পশুকে এক সারিতে বেঁধে পালন করা হয়। একটি পশুর জন্য দাঁড়াবার স্থান ১৬৫ সে.মি, পাশের জায়গা ১১০ সে.মি., খাবার পাত্র ৭৫ সে.মি. ও নালা ৩০ সে.মি. প্রয়োজন। প্রতিটি পশুকে পৃথক রাখার জন্য পাইপ বা বাঁশ আড়ের সাথে বেঁধে দিতে হবে।

খ. দু’সারি বিশিষ্ট গোশালা :   

অধিক সংখ্যক পশু পালনের জন্য এরকম গোশালা প্রয়োজন। মুখোমুখি পদ্ধতির গোশালাতে দুই সারি পশুর মাথা সামনা সামনি বা মুখোমুখি থাকে। দু’সারি খাবারের পাত্রের মাঝে ১.৫ মিটার চওড়া রাস্তা থাকে খাবার পাত্রে খাবার দেয়ার জন্য। দাঁড়াবার স্থান গাভীর জন্য প্রায় ২ মিটার ও পাশের জায়গা ১ মিটার প্রয়োজন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পশুর লেজের দিকে লেজ বা বিপরীতমুখির ঘরে উভয় সারির পশুর মাথা বহির্মুখী থাকে। এ গোশালায় দু’সারি পশু দাঁড়াবার জায়গার মাঝখানে ১.৫ মিটার চওড়া পথ থাকে। পশু দাঁড়াবার জন্যে ২ মিটার জায়গা দরকার। বয়স্ক মহিষের জন্য ২৫ বর্গমিটার, বাড়ন্ত বাছুর ১৫ বর্গমিটার, গর্ভবতী গাভী ৪০ বর্গমিটার ও ষাঁড়ের জন্য ৬০ বর্গমিটার জায়গা প্রয়োজন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top